1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ২৫ হাজার মানুষের ভোগান্তি

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০২২
  • ১২২ বার পঠিত

বড়লেখা প্রতিনিধি :: বন্যায় মুছেগুল হিনাইনগর সড়কের দক্ষিণ হিনাইনগর (বালিছড়া) এলাকায় সড়কের প্রায় ১৩০ ফুট অংশ ভেঙেছে। এই জায়গায় এলাকাবাসী সাঁকো নির্মাণ করে পারাপার হচ্ছেন।

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার বড়লেখা সদর ইউনিয়নের আরএইচডি বরইতলি-বড়লেখা জিসি ভায়া মুছেগুল হিনাইনগর সড়কের দক্ষিণ হিনাইনগরে (বালিছড়া) এলাকায় প্রায় ১৩০ ফুট সড়ক পাহাড়ি ঢলে ভেঙে যায়। গত ১৭ জুন ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সারা এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়লে সড়কটির এই অংশ পানির তোড়ে ভেসে যায়। এতে করে একটি চা-বাগান ও তিনটি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ সরাসরি সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।

জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙা অংশে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে সাময়িক চলাচলের ব্যবস্থা করেছেন। প্রায় এক মাস ধরে এই অবস্থায় উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছেন স্থানীয় মানুষ।

উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ জুন ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বড়লেখা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় উপজেলার বড়লেখা সদর ইউনিয়নের আরএইচডি বরইতলি-বড়লেখা জিসি ভায়া মুছেগুল হিনাইনগর সড়কের দক্ষিণ হিনাইনগরের বালিছড়া নামক স্থানের প্রায় ১৩০ ফুট সড়ক পানিতে সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। এই স্থানটির পাশেই উজানের পানি নেমে যাওয়ার জন্য একটি ছোট কালভার্ট আছে। কিন্তু এই কালভার্টটি পানি টানতে পারেনি। এক সময় ঢলের পানি সড়ক ডুবিয়ে নিচের দিকে প্রবাহিত হতে থাকে। একপর্যায়ে ঢল কালভার্টের কাছে পাকা সড়কটির অংশ ধুয়েমুছে ভাসিয়ে নিয়েছে। এতে করে এই এলাকার কেরামতনগর (দক্ষিণগুল) চা-বাগান, মুছেগুল, হিনাইনগর ও কুতুবনগর এলাকার মানুষ উপজেলা সদরসহ বাইরের সাথে সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।

এই সড়ক দিয়ে উপজেলা সদরের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও স্থানীয় বড়খলা মাদ্রাস, মুছেগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হিনাইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আসা যাওয়া করে। ভাঙনের অংশটি পড়েছে হিনাইনগর ও মুছেগুলের সংযোগস্থলে। সকল প্রকার যান ভাঙনের অংশে এসে আটকে যাচ্ছে।

এদিকে পানি নামার কয়েকদিন পর সাময়িক চলাচলের সুবিধার্থে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গ্রামবাসী ভাঙনের অংশে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছেন। এই সাঁকোই এখন তাদের যোগাযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে অন্যতম ভরসা। নতুন করে স্থানটি সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত সাঁকোই চলাচলের উপায়। এছাড়া ঢলে সড়কের পূর্ব মুছেগুল অংশে লাল মিয়ার বাড়ির কাছে একটি স্থানেরও পিচ উঠে গেছে।

হিনাইনগর গ্রামের বাসিন্দা ও বড়লেখা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুনেদ আহমদ বলেন, ‘সেদিন (১৭ জুন) এযাবতকালের সবচেয়ে বড় ঢল নেমেছিল। আমরা কল্পনাও করিনি ঢলে এরকম ভাঙবে। দুবছর আগেও একবার ভেঙেছিল। কিন্তু অল্প ভেঙেছিল। এবার পাহাড়ি ঢল এলাকাকে একেবারে নাস্তানাবুদ করেছে। মুছেগুল, হিনাইনগর, কুতুবনগর ও কেরামতনগর (দক্ষিণগুল) চা-বাগানকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। এটি একটি দীর্ঘদিনের পাকা সড়ক। এই সড়ক দিয়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ চলাচল করেন।’

তিনি বলেন, ‘নিখড়িছড়ার (খাল) পানি উপচে এসে ঢল নামে। এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। পাহাড়ি ঢল এখন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে গেছে। এটা একটা বড় সমস্যা এখন। যুবসমাজসহ সবার সমন্বয়ে উপস্থিত চলার উপযোগী একটা সাঁকো করা হয়েছে। এই সাঁকো দিয়েই চলাচল করছি সবাই।’

তিনিসহ স্থানীয়রা মনে করছেন, এরকম পাহাড়ি ঢলের একটি বড় কারণ হচ্ছে নিখড়িছড়ার নিচু অংশ খনন করা হয়েছে। কিন্তু উপরের দিকে নিখড়িছড়ার পাশে যাদের বাড়িঘর, তারা ছড়ার দিকে বাঁশ রোপণ করেছেন। সেসব বাঁশ ঝাড়ের কারণে ছড়ার অনেক স্থান ছোট হয়ে গেছে। ভারী বর্ষণ হলে পানিপ্রবাহ ব্যাহত হয়। তখন নিখড়িছড়ার পাড় উপচে এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। এতে শুধু যে আশপাশের গ্রামই প্লাবিত হয়, তা নয়। নিখড়িছড়ার উপচানো পানি একদিকে কুতুবনগর, কেচরিগুল, ইয়াকুবনগর, পাখিয়ালা এবং অপরদিকে হিনাইনগর ও মুছেগুল হয়ে বড়লেখা পৌর শহরকেও প্লাবিত করে।

এবারও শহরের মধ্য দিয়ে যাওয়া মৌলভীবাজার-কুলাউড়া-বড়লেখা-চান্দগ্রাম সড়কের বিভিন্ন স্থানের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের চাপ কমাতে নিখড়িছড়ার উজানের অংশ খনন বা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা না হলে পানিপ্রবাহ বাঁধাগ্রস্ত হবে। ভারী বর্ষণ হলে এলাকায় এরকম পাহাড়ি ঢল নেমে আসবে।

বড়লেখা সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ছালেহ আহমদ জুয়েল বলেন, ‘মানুষ চলাচলের জন্য বাঁশের একটি সাঁকো করা হয়েছে। স্বেচ্ছাশ্রম ও বাঁশ দিয়ে সব মানুষ সহযোগিতা করেছেন। এলজিইডি (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর) বলেছে তাদের জরুরি কাজের প্রস্তাবে এই স্থানটিও আছে।’

বড়লেখা উপজেলা প্রকৌশলী প্রীতম সিকদার জয় বলেন, ‘ভাঙা অংশের পাশে একটা ছোট কালভার্ট আছে। কালভার্ট দিয়ে ঢলের পানি কাভার করেনি। কালভার্টের পাশেই সড়ক ওয়াশ আউট হয়ে গেছে। স্থানীয় মানুষ বলেছেন, প্রতিবছরই এই রাস্তার উপর দিয়ে ঢলের পানি যায়। তবে তা এক ঘন্টার বেশি থাকে না। এবার প্রায় ১৭/১৮ ঘন্টা পানির স্রোত ছিল।’

উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, ‘জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে স্থানটি দেখে গেছেন। এবছরের মধ্যেই এই ভাঙা অংশে একটি বড় কালভার্ট করে সংযোগ পুনস্থাপন করা হবে। তবে রাস্তার পুরো কাজ আগামী বছরের আগে করা যাবে না। মাটি ভালো করে না বসলে পিচ টিকবে না।’

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..